প্রকাশকাল : | অক্টোবার ২০২৪ |
সংস্করণ : | প্রথম |
পৃষ্ঠা সংখ্যা : | ২২৪ |
পরিমাপ : | ৫.৫” x ৮.৫” |
বাঁধাই : | বোর্ড বাঁধাই |
ISBN | 978-81-972168-2-4 |
Karl Marx: Jibon O Manan
শহিদ কবি সরোজ দত্ত একবার বলেছিলেন, ইতিহাসের জটিল গতিপথেই জন্ম দেয় ব্যক্তির, সৃষ্টি করে তাঁর নির্দিষ্ট ভূমিকা; পরবর্তীকালে সেই ব্যক্তিই নির্মাণ করেন ইতিহাস। তাঁর এই উক্তি, বলা বাহুল্য, কার্ল মার্কসের ক্ষেত্রে একশো ভাগ প্রযোজ্য। পঞ্চদশ শতাব্দীর রেনেসাঁসজাত আলোকমালা ফরাসি বিপ্লবের মাধ্যমে নিজের ঔজ্জ্বল্য বাড়িয়ে হেগেল, ফয়েরবাখ প্রমুখের দার্শনিক সংবিৎ, অ্যাডাম স্মিথ, রিকার্ডোদের অর্থশাস্ত্রীয় কাঠামো এবং সেন্ট সাইমন, রবার্ট আওয়েনদের কল্পস্বর্গী সমাজবাদের শরীর ছুঁয়ে যখন সমাজ বদলের তীব্র আকাঙ্ক্ষায় বিপ্লবের অজানা দেশে পাড়ি জমাতে অস্থির হয়ে উঠল, তখনই আবির্ভাব ঘটল মার্কসের, যিনি বুদ্ধিবৃত্তির এতদিনকার হেটমুণ্ড উর্দুপদ অবস্থাকে রীতিমতো কান ধরে পায়ের ওপর দাঁড় করিয়ে দিলেন। দেখালেন, যুগ যুগ ধরে দার্শনিকরা কেবল দুনিয়াটাকে ব্যাখ্যা করেছেন, কিন্তু আসল কাজটাই বাকি থেকে গেছে। কাজটা হলো, এই পচে যাওয়া, খসে পড়া ব্যবস্থাটাকে পালটে দেওয়া, এবং এমন এক সমাজ নির্মাণ করা যাতে মানুষের দ্বারা সৃষ্ট অথচ মানুষের ওপরেই সিন্দবাদ নাবিকের সেই শয়তান বুড়োর মতো চেপে বসা রাষ্ট্রটাকে ধ্বংস করা যায় এবং তৈরি করা যায় এমন এক শোষণহীন সমাজ যেখানে মানুষ “প্রয়োজন মাফিক পাবে এবং ক্ষমতা মাফিক দেবে”। সেই মনস্বী চিন্তক তথা প্রয়োগবিদ কার্ল মার্কসের জীবন এবং তাঁর মতাদর্শের সুলুক সন্ধান বাংলা ভাষায় এযাবৎকালে লেখা কোনো বইতে সেভাবে পাওয়া যায়নি, যায় না। সাত অধ্যায়ে বিভক্ত এই বইতে সেই কাজটাই নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করেছেন লেখক সুনীল মিত্র। মার্কসের জীবন ও যাপন কথা যে তাঁর মতাদর্শেরই প্রতিচ্ছবিরূপ, তা সুনীল বাবু এই বইতে প্রমাণ এবং প্রতিষ্ঠা করেছেন অপূর্ব দক্ষতায়।
- নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ
- পারি ও ব্রাসেলস: নির্বাসিত জীবন
- সংগঠন ও বিপ্লবের আবর্তে
- লন্ডনের প্রবাস-জীবন
- আর্থনীতিক গবেষণার সূচনা
- মোহনার দিকে
- অমরত্বের আসনে
সুনীল মিত্র
সুনীল মিত্রের জন্ম ১৯৩৩ সালে, অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলায়। দেশভাগের পর তাঁর বাবা- মা চলে আসেন বিহারের দেওঘরে, এবং সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার চাকদহে। চাকদহে এসে মার্কসীয় মতবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন যুবক সুনীল। ১৯৫৭ সালে চাকদহে কমিউনিস্ট পার্টির যে শাখা গঠিত হয়, তার প্রথম সম্পাদক হন তিনি। পার্টির রাজনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনার পাশাপাশি, তিনি সাংস্কৃতিক কাজকর্ম এবং পার্টি ক্লাস পরিচালনার ক্ষেত্রে ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। পাশাপশি, কৃষক আন্দোলনেও তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ১৯৬৪ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি দুই ভাগে বিভক্ত হলে ভাঙা-সিপিআইযের নদিয়া জেলা কৃষক সভার সম্পাদক হন তিনি। ৭০ দশকের মাঝামাঝি রাজ্যের লেনিন স্কুলকে শক্তিশালী করা এবং “শান্তি স্বাধীনতা গণতন্ত্র” পত্রিকাকে পেশাদারী রূপ দিতে পার্টির তদানীন্তন রাজ্য সম্পাদক গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসেন। আশির দশকে সুনীল মিত্র পার্টির প্রকাশন সংস্থা মনীষা গ্রন্থালয়ের অন্যতম সম্পাদক-অনুবাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই সময়ে তিনি ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’, ভরতমুনির ‘নাট্যশাস্ত্র’, মিখাইল গর্বাচেভের ‘পেরেস্ত্রোইকা’, প্রমুখ বই বাংলায় অনুবাদ করেন। এছাড়াও, তিনি পার্টি এবং পার্টির কাছাকাছি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করতেন। ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তাঁর জীবনাবসান ঘটে।